আমি মোটা হবো কিভাবে

অনেকেই জানতে চান, আমি মোটা হবো কিভাবে? কারণ অতিরিক্ত ওজন কম থাকার ফলে শারীরিক দুর্বলতা, আত্মবিশ্বাসের অভাব এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

তবে মোটা হওয়া মানেই শুধু ওজন বাড়ানো নয়, বরং এটি হতে হবে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে। 

যারা প্রাকৃতিক এবং কার্যকরী উপায়ে ওজন বাড়াতে চান, তাদের জন্য আমার এই পুষ্ট সহায়ক হবে।

ওজন বাড়ানোর প্রক্রিয়ায় প্রথম ধাপ হলো সঠিক ডায়েট অনুসরণ করা। প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাটসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। 

যেমন, ডিম, দুধ, বাদাম, মাংস এবং ভাত নিয়মিত খাওয়া যেতে পারে। তবে আপনাকে  পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম করা এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া ওজন বাড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

আবার অনেকেই প্রশ্ন করেন, কত দ্রুত ওজন বাড়ানো সম্ভব? এটি নির্ভর করে আপনার শারীরিক অবস্থা এবং অভ্যাসের ওপর। 

তবে আপনার ওজন বাড়ানোর জন্য আপনাকে ধৈর্য ধরে স্বাস্থ্যকর উপায় অনুসরণ করলে দীর্ঘমেয়াদে আপনি সঠিক ফলাফল পাবেন।

এই পুষ্টে আমরা আলোচনা করব কীভাবে আপনি দ্রুত এবং কার্যকরভাবে ওজন বাড়াতে পারবেন। আপনি কীভাবে মোটা হবেন এই পরামর্শ খুঁজছেন, তবে এটি আপনার জন্য সঠিক পথপ্রদর্শক।

১৫ দিনে মোটা হওয়ার উপায়

আপনাকে নিয়মিত প্রতিদিনের খাবারে বেশি ক্যালোরি যুক্ত করতে হবে। যেমন,  চাল, আলু, ঘি, মাখন, দুধ, চিজ, এবং বাদামজাতীয় খাবার নিয়মিত খেতে হবে। 

আবার আপনাকে প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে, যেমন, প্রতিদিন ডিম, মাংস, মাছ, ডাল, এবং সয়া প্রোটিন খাবারের তালিকায় রাখতে হবে। 

এই পক্রিয়া গুলু আপনার ওজন বাড়াতে সহায়তা করবে। তবে আপনার বারবার খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। 

প্রতিদিন ৫-৬ বেলা খেতে হবে। যেমন, সকালে, দুপুরে, রাতে প্রধান খাবারের পাশাপাশি হালকা স্ন্যাকস নিতে হবে। এ খাবারের পাশাপাশি আপনাকে ফলমূল ও জুস পান করতে হবে। 

যেমন,  কলা, আম, খেজুর, এবং আপেলের মতো উচ্চ-ক্যালোরি ফল খেতে হবে। আবার এই খাবারের সঙ্গে দুধ বা দাই  খাওয়া জরুরী। কিন্তু আপনাকে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। 

পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। শরীরে পানির অভাব হলে খাবার হজমে সমস্যা হয়। প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করতে হবে। 

আপনাকে খাবাবের পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। যেমন, হালকা ওজন তোলা বা স্কোয়াট জাতীয় ব্যায়াম করতে হবে। এটি আপনার শরীরের মাংসপেশি বাড়াতে সাহায্য করবে। 

আপানার পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে। শরীরের পুনর্গঠন ও ওজন বাড়ানোর জন্য ঘুম গুরুত্বপূর্ণ।

খাওয়ার পরেও মোটা না হওয়ার কারন কি?

খাওয়ার পরেও মোটা না হওয়ার কারন আপনার শরীরের পর্যাপ্ত বিপাকীয় হার বেশি থাকায় আপনার খাবারের ক্যালোরি দ্রুত পুড়ে যায়।  

 হরমোনাল সমস্যা থাইরয়েড গ্রন্থির অতিসক্রিয়তা (হাইপারথাইরয়েডিজম) বা অন্যান্য হরমোনজনিত সমস্যা শরীরের ওজন বাড়াতে বাধা দেয়।

 পেটের সমস্যা, যেমন গ্যাস্ট্রিক, আলসার, বা ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম (IBS) খাবার থেকে পুষ্টি শোষণে বাধা সৃষ্টি করে। 

আপনার অপুষ্টি বা পুষ্টির ঘাটতি সঠিক পরিমাণে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ও ফ্যাট না খাওয়া বা শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি শোষণ না হওয়া ওজন না বাড়ার অন্যতম কারণ। 

আপনার মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা ডিপ্রেশন শরীরের হরমোনে প্রভাব ফেলে, যার কারণে  ওজন বাড়ানো কঠিন করে তোলে। 

অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম দৈনন্দিন কাজ বা ব্যায়ামে যদি শরীরের ক্যালোরি বেশি খরচ হয়, তবে আপনার ওজন বাড়া কঠিন। 

আপনার ধীর ঘুমের অভাব পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীর তার কার্যকরী পুনর্গঠন করতে পারে না, যার পক্ষে ওজন বাড়াতে বাধা দেয়। 

তবে পরিবারে যদি সবাই স্বাভাবিকভাবে পাতলা হয়, তবে জেনেটিক প্রভাবেও মোটা হওয়া কঠিন হতে পরে।

 টিউবারকুলোসিস (টিবি), ডায়াবেটিস, বা ক্যান্সারের মতো রোগ শরীরের পুষ্টি শোষণ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। সঠিক সময় ও পরিমাণে খাবার না খাওয়া, অতিরিক্ত ফাস্টফুড খাওয়া বা জলবিহীন খাবার খাওয়ার অভ্যাস ওজন বাড়াতে বাধা দেয়। আপনি এই কারণগুলো চিহ্নিত করে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক পদক্ষেপ নিলে আপনার শরীরের ওজন এবং মোটা হতে সহায়তা পাওয়া যাবে।

রোগ থেকে মোটা হওয়ার উপায়

  • রোগ নিরাময়ের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
    প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, এবং ফ্যাটসমৃদ্ধ খাবার নিয়মিত খান।
    চিকিৎসকের পরামর্শে ভিটামিন ও মিনারেল গ্রহণ করুন।
    ছোট ছোট পরিমাণে খাবার খান।
    প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন ও ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমান।
    হালকা ব্যায়াম।
  • প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ দই বা কেফির খান।
    মানসিক চাপ কমান 

কি খেলে মোটা হওয়া যায় তারাতারি

মোটা হওয়ার জন্য আপনাকে কিছু পুষ্টিকর খাবাড় খেতে হবে যেমন,

  • ডিম, মুরগির মাংস, গরুর মাংস, মাছ।
  • সয়া, ডাল, এবং চিজ।
  • ভাত, রুটি, আলু।
  • বাদাম (আমন্ড, কাজু, আখরোট)।
  • ঘি, মাখন, অলিভ অয়েল।
  • কলা, আম, খেজুর, এবং পাকা পেঁপে।
  • দুধের সঙ্গে ফলের স্মুদি।
  • ফুল ফ্যাট দুধ, দই, পনির।
  • ক্রিম বা বাটারমিল্ক।
  • ভুট্টা, গম, এবং ব্রেড।
  • খেজুর বা মধুর সঙ্গে চিড়া।

মোটা না হওয়ার কারন কি

মোটা না হওয়ার কারন আপনার শরীরের বিপাকীয় হার বেশি থাকার কারণে খাবারের ক্যালোরি দ্রুত পুড়ে যায়, যার ফলে ওজন বাড়তে পারে না। 

থাইরয়েড হরমোনের অতিরিক্ত কার্যকলাপ (হাইপারথাইরয়েডিজম) আপনার শরীরের ক্যালোরি দ্রুত পোড়াতে সাহায্য করে, যা মোটা হওয়া কঠিন করে তোলে। 

কিছু মানুষ রয়েছে  জিনগত কারণে শরীরের গঠন পাতলা থাকে এবং তারা সহজে তাদের ওজন বাড়াতে পারেন না।

 শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি না পেলে খাবার থেকে শক্তি শোষণ কম হয়, যার ফলে ওজন বাড়ানো সম্ভব হয় না। 

আবার অতিরিক্ত মানসিক চাপ শরীরের বিপাকীয় ক্রিয়া বাড়িয়ে দেয়, যা ওজন বাড়ানোর প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করে তুলে। 

অতিরিক্ত ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম করলে শরীর বেশি ক্যালোরি খরচ করে, ফলে ওজন বাড়ে না। আপনার পেটের সমস্যা যেমন গ্যাস্ট্রাইটিস বা IBS শরীরের পুষ্টি শোষণের ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হয়, যার কারণে শরীর তার পুষ্টি শোষণ ক্ষমতা হারায়, যা ওজন বাড়াতে বাধা সৃষ্টি করে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *