১১ শ্রেণির সেরা ও ভাল মানুষ আল্লাহ ও রাসূল (সাঃ) যাদের শ্রেষ্ঠ বলেছেন।

আজ আমরা নবী করিম ( সাঃ) এর চোখের দৃষ্টিতে এগারো জন শ্রেণির মানুষ গুলোর পরিচয়  জানব, যে মানুষ গুলোকে নবী করিম (সাঃ) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে সবচাইতে ভালো লোক,

তোমাদের মধ্যে সব চাইতে শ্রেষ্ঠ মানুষ, তোমাদের মধ্যে সব চাইতে উত্তম মানুষ এই কথা গুলো নবী (সাঃ) বিভিন্ন হাদীসের বিভিন্ন চরিত্রের কথা উল্লেখ করেছেন, এই চরিত্রের মানুষ গুলো কে কে আজ আমরা জানব। 

এগারো শ্রেণির মানুষ আমরা জানি বিভিন্ন হাদীস থেকে, এই মানুষ গুলোকে নবী করিম (সাঃ) শ্রেষ্ঠ মানুষ বলেছেন, সর্ব উত্তম মানুষ বলেছেন, সবচাইতে আল্লা কাছে আল্লার হাবিবের কাছে প্রিয় মানুষ বলেছেন, 

আমাদের সমাজে এরকম অনেক মানুষ আছে, যে মানুষ গুলো আল্লাহ এবং তার রাসূল (সাঃ) এর কাছে শ্রেষ্ঠ এবং প্রিয়। 

কিন্তু এই এগারো জন শ্রেষ্ঠ মানুষের চরিত্র আমরা যদি কেউ ধারণ করতে পারি, সে হবে গুটা সমাজের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ, সবচেয়ে ভালো, উত্তম, সবচেয়ে নেক এবং সবচাইতে আল্লাহ ওয়ালা মানুষ। তবে এই এগারোটি গুণ যার মধ্যে যত কম থাকবে, সে শ্রেষ্ঠত্বের বিচারে।

সে তত বেশি পিছিয়ে, অতএব আমরা তুলনা করব এবং সম্ভব হলে, নবী  রাসূল (সাঃ) এর হাদীসের আলোকে এই এগারোটি চরিত্র  গুলোকে একটি কাগজে করে আমরা বাসায় বা অফিসে এবং ডাই রিতে নোট করে মাঝে মধ্যে চোখ বুলিয়ে দেখব, যাতে করে এর কোন কোন গুণটি আমাদের মধ্যে আছে, আর কোন কোন গুণটি  আমাদের মধ্যে নেই, 

সেটা আমরা যেন পর্যালোচনা করতে পারি এবং যে গুণগুলো আছে সে গুণগুলোকে টিক ধরে আল্লাহর শোকর আদায় করতে পারি এবং 

সে গুণগুলোকে মজবুত ধরে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি, আর যে গুণগুলোর মধ্যে আমাদের অবাব আছে তা টার্গেট নিতে হবে, যে এই গুণটি আমার মধ্যে নেই, এই গুনটি অর্জন করতে হবে। 

এই চেলেঞ্জ যদি আমরা নিতে পারি তাহলে আমাদের জীবন সাধনা হবে সার্থক হবে, তবেই আমরা এই দুনিয়ার সংকিপ্ত জীবন থেকে আখিরাতের জান্নাতি হয়ে যেতে পারব। 

যে কোরআন শিখে এবং শিক্ষা দেয়। 

নবী করিম (সাঃ) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে সর্বউত্তম, সর্বশ্রেষ্ঠ, সবচেয়ে মর্যাদাবান এবং আল্লাহর কাছে ভালো ওই শ্রেণির মানুষ যারা কোরআান শিখে এবং কোরআান শিখায়, 

এই মানুষ গুলো হলো নবী রাসূল (সাঃ) এর চোখের দেখা সবচাইতে সেরা, সবচাইতে শ্রেষ্ঠ এবং উত্তম মানুষ।

এবার আমাদেরকে মিলাতে হবে, আমরা কি কোরানের শিক্ষক নাকি, ছাত্র যদি কোনোটাই না মিলে, তাহলে আমাদেরকে কোরআনের ছাত্র  হওয়ার চেস্ট করতে হবে। 

কোরআান সুধ্য করতে হবে, কোরআান বোঝার জন্য এখন অনলাইনে অনেক গুলো কোর্স অফার করা হয়, অনলাইনে মাত্র কয়েকটি ক্লাস করলেই আপনি দেখবেন কোরআানে যে কথা আল্লাহ বলেছেন আপনি তেলাওয়াত করে সেটা বোঝতে পারবেন, 

নামাজে মনো যুগ আাসবে, আপনার ভালো লাগা কাজ করবে, এজন্য আমাদেরকে কোরআান শিখতে হবে এবং অন্য জনকে শিখাতে হবে।

যাদের আখলাক এবং ব্যাবহার সুন্দর

নবী ( সাঃ) বলেছেন, (মোসা আরকা হাকীম হাদীসে বর্নিত হয়েছে) আল্লার বান্দাদের মধ্যে আল্লার কাছে সবচাইতে প্রিয় বান্দা হলেন ওই সকল বান্দারা যাদের আখলাক, আচরণ এবং ব্যবহার সবচাইতে সুন্দর। 

আমাদের সমাজে যত নামাজি মানুষ পাওয়া যায়, রোজাদার ব্যাক্তি পাওয়া যায়, যত ইবাদত ওয়ালা মানুষ পাওয়া যায়, তত আখলাক ভালো আচরণ ওয়ালা মানুষ পাওয়া যায় না। 

অতএব আমাদেরকে শ্রেষ্ঠ মানুষের কাতারে যেতে হলে আখলাকটা ভালো করতে হবে, এবং তালিকা করে নিজের আখলাককে সংশোধন করার জন্য নিজের বিরুদ্ধে সুদ্দি অভিজান চালাতে হবে, 

আমি কেন আজকে আমার আখলাকটা কারাপ করলাম, না এটা থেকে আমাকে সরে আসতে হবে, কাল আর যেন এটা না হয় এবং যেটা হয়েছে তার জন্য তাওবা করতে হবে।

এইভাবে চেস্ট করতে করতে আপনি একসময় দুনিয়া ছেরে চলে যাবেন আপনি জান্নাতি হতে পারবেন, তবে আমাদেরকে অবশ্যই তাকওয়া করতে হবে, নবী রাসূল (সাঃ) বলেছেন, 

আল্লাহ তায়ালার কাছে সবচাইতে প্রিয় মানুষ  তারা যাদের আখলাক ভালো, আখলাক কিয়ামতের ময়দানে সকল আমল, যত ভালো কাজ আপনি করবেন এর মধ্যে যত আমল মিযানের পাল্লায় বারি হবে তার মধ্যে অন্যতম আমল হচ্ছে আখলাক।

যে ব্যাক্তি ওয়াদা বঙ্গ করেনা

মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ) বলেছেন, তেমাদের মধ্যে ভালো মানুষ কারুর কাছ থেকে কোনো কিছু ধার নিলে, সেটা আদায় করবার সময় ভালো পরিচয় দেয়, উত্তম রুপে আদায় করে, 

কথা ঠিক রাখে, ওয়াদা বঙ্গ করেনা। আবার অনেক লোক আছে যারা ধার নিলে ফেরত দেয়না, এটা কোনো মুসলমানের চরিত্র নয়, মুসলমানের গুণ নয়।

নবী (সাঃ) বলেছেন, সে সবচাইতে ভালো মানুষ যারা মানুষের ধার<দেনা<বাকি এগুলো পরিশোধ করার সময় ভালো মানুষের পরিচয় দেয়।

যে ব্যক্তি একে অন্যের সাতে ভালো আচরণ করেন

নবী করিম (সাঃ) বলেছেন, তিরমিস বর্নিত হাসীসে চতুর্থ ভালো মানুষ এবং শ্রেষ্ঠ মানুষ তারা, যাদের কাছ থেকে মানুষ সব সময় উপকারের আশা করে, 

ভালো কিছু আশা করে, ক্ষতির আশা করে না, এই চরিত্রের মানুষ গুলো হচ্ছে সবচাইতে ভালো মানুষ।

আবার কিছু মানুষ আছে যারা কারুর কাছ থেকে ধার নেবার আগে বিভিন্ন  ভাবে চিন্তা করে পেলে, তার কাছে গেলে আমার ক্ষতি হবে। 

নবী করিম (সাঃ) বলেন, সে মানুষ গুলো আল্লার কাছে ভালো, যে মানুষ গুলোকে সমাজের মানুষ মনে করে, তার কাছ থেকে ভালো কিছু পাবে, কারাপ কিছু পাবনা।

যারা পরিবার এবং স্ত্রীর সাথে ভালো ব্যবহার করেন

নবী করিম (সাঃ) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে ভালো মানুষ হচ্ছে ওই ব্যাক্তিরা যাদের পরিবারের, স্ত্রীর কাছে ভালো। অর্থাৎ স্ত্রী মন থেকে সাক্ষ্য দেয়, যে আমার শামী, জীবন সংগী অমাইক মানুষ, 

আসলেই একজন ভালো মানুষ, এই সার্টি পিকেট কেউ যদি তার স্ত্রীর কাছ থেকে পাব বলে তার দিল সাক্ষ্য দেয়, এই মানুষটা আসলেই ভালো মানুষ, আল্লার কাছেও ভালো মানুষ। 

নবী করিম (সাঃ) এই হাদীস বলার সময় বলেছেন, তোমাদের মধ্যে স্ত্রীর কাছে কে কে ভালো আছে তা আমি জানি না, তবে তোমাদের মধ্যে আমি আমার পরিবারের কাছে একজন ভালো মানুষ, অর্থাৎ আমার পরিবারের সবাই প্রত্যেক স্ত্রী নবী ( আঃ) কে ভালো জানতেন,

শ্রদ্ধা করতেন, তার ব্যাপারে কোনো অভিযোগ ছিল না, কারণ তিনি স্ত্রীদেরকে কখনো আঘাত দিয়ে কথা বলতেন না।

তিনি এমন ভাবে তাদের সাতে জীবন যাপন করতেন যে, তারা প্রত্যকেই তার আচরণে মুগ্ধ থাকতেন। অতএব যারা বিবাহিত আছেন তাদেরকে খুজে বের করতে হবে এই গুণটি কার মধ্যে আছে কার মধ্যে নেই, যদি না থাকে তাহলে এখন থেকে নিজেকে বদলান, পরিবর্তন করুন।

যে ব্যক্তি গরীবের খোদা মেটার জন্য খাদ্য এবং সালামের উত্তর দেয়  

নবী করিম (সাঃ) বলেছেন, সবচাইতে উত্তম মানুষ হলো তারা, যারা মানুষকে খাদ্য দান করে, এবং সালামের জবাব দেয়, খাদ্য ধান করা এটা সতন্ত্র একটা ইবাদত। এই ছোট  ছোট আমল গুলো মানুষের জান্নাতে যাওয়ার কারণ হতে পারে,

আল্লাহ তায়ালা জান্নাতে যাওয়ার বাহানা খুঁজবেন, এই যে মানুষকে কোজে কোজে খাদ্য দেওয়া, এটি এমন একটি ইবাদত যার মাধ্যমে মানুষ, আল্লার কাছে শ্রেষ্ঠ মানুষ হতে পারে, নবীজির চোখে সেরা মানুষ হতে পারে। 

সেরা এগারোজন মানুষের মধ্যে আপনি ডুকতে পারবেন যখন এই গুণটি আপনার মধ্যে আসবে, সেই সাতে সালামের জবাব দেওয়া, কেউ যদি সালাম দেয় তাকে সোনিয়ে সালামের জবাব দেওয়া ওয়াজিব। অতএব আপনি আল্লাহর এবং নবীর কাছে ভালো মানুষ হতে হলে মানুষকে খাদ্য এবং সালামের জবাব দিবেন।

যে ব্যক্তি সালাত আদায় করার সময় অন্য মুসল্লি দেরকে সালাতের জায়গা করে দেয়

নবী করিম (সাঃ) এর চোখে সেরা মানুষ তারা, যারা নামজে যখন দারায় আশেপাশে মুসল্লি দেরকে জায়গা করে দেয়, মহানবী (সাঃ) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে সর্ব শ্রেষ্ঠ এবং প্রিয় মানুষ হলেন তারা যারা নামাজে ধারানোর সময় পাসের মুসল্লীদের জন্য কাদটিকে নরম করে দেয় এবং

এমন ভাবে নামাজে দাঁড়ায় যাতে করে আশেপাশে কারুর যেন কষ্ট না হয়। এই যে কাদ টাকে নরম করা অন্য জনকে সুযোগ করে দেওয়া কাতারের পাকা বন্ধ করা, তারাই হলেন নবীজির চোখে শ্রেষ্ঠ এবং সেরা মানুষ। 

যাদেরকে আল্লাহ তায়ালা দীর্ঘ হায়াত দিয়েছেন এবং জীবনে ভালো কাজ করেছে 

নবী করিম ( সাঃ) এর চোখে দেখা ভালো লোক হচ্ছে তারা, যেই লোক গুলোকে আল্লাহ অনেক লম্বা হায়াত দিয়েছেন এবং লম্বা হায়াত পেয়ে জীবনে ভালো কাজ করেছে , 

জীবনে কখনো কোরআান তেলাওয়াত ছুটে নাই, জিনার পাপ করে নাই, কখনো নামাজ ছাড়ে নাই, মানুষের হক মারেনাই, এভাবে তার জীবন টাকে সুন্দর ভাবে সাজিয়েছে, এই মানুষগুলো নবী (সাঃ) এর চোখে সেরা মানুষ।

এজন্য নবী (সাঃ) বলেছেন, সবচেয়ে ভালো এবং সেরা মানুষ যাদেরকে আল্লাহ তায়ালা জীবনে হায়াত দিয়েচেন দীর্ঘ, আবার তারা ভালো কাজ করেছে।

যে ব্যক্তি একে অপরের সাহায্য করে

নবী রাসূল (সাঃ) বলেছেন, যে মানুষ গুলো মানুষের উপকার করে, সেই মানুষ গুলো হচ্ছে সবচেয়ে ভালো মানুষ, শ্রেষ্ঠ মানুষ এবং প্রিয় মানুষ। কিন্তু আমাদের সমাজ টা এখন এত স্বার্থপর হয়ে যাচ্ছে কেউ কারুর বিপদে এগিয়ে যায় না, তবে এটা মুসলমানদের পরিচয় নয়।

আল্লাহর কাছে আপনি সেরা মানুষ হওয়ার জন্য অনেল গুলো নফল ইবাদত করলেন এটাই এক মাত্র পথ নয়, তার পাশাপাশি মানুষের ইবাদত ও করতে হবে। 

( ডঃ খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাঃ তিনি বলেছেন, আমি সারা জীবন দেশে দেশের বাহিরে ইসলাম সম্পর্কে সর্বউচ্চ ডিগ্রি নিয়ে যুগ যুগ ধরে পড়া সোনা করে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আল হাদীস ডিপার্টমেন্টের শিক্ষকতা করে আমি কোরআন হাদীস সম্পর্কে দীর্ঘ কাল পর্যন্ত

এনালাইসিস করে আমি দুটি জিনিস ভের করেছি, একটা হলো ইমানের ফল, আরেকটি মানুষের উপকার করা) কুপরি করার পর যেই কাজে আল্লাহ সবচাইতে বেশি অসন্তুুষ্ট হন সেটা হচ্ছে মানুষের ক্ষতি করা।    

যাদের বন্ধু এবং প্রতিবেশীদের সাতে ভালো সম্পর্ক  

নবী করিম (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি তার বন্ধুদের কাছে ভালো মানুষ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত অপরিচিত এবং প্রতিবেশীদের মধ্যে  সবচেয়ে ভালো প্রতিবেশী হলো সে, যে তার প্রতিবেশীর কাছে ভালো এবং প্রতিবেশীদের সাতে ভালো সম্পর্ক,

তারা একটু কস্ট দিলেও সে কস্ট দেয়না, সে এটাকে কমার চোখে দেখে, ভালো ভাবে তাকার চেস্ট করে, তারা আল্লাহর কাছে ভালো এবং  নবীজির কাছে সবচাইতে প্রিয় মানুষ।

যে ব্যক্তির অন্তত পরিস্কার এবং পবিত্র 

নবী করিম ( সাঃ) বার্সা অনুযায়ী ভালো মানুষ সেরা মানুষ সেরা মুসলমান সে, যে মানুষের অন্তরটা পরিচ্চন্ন, পবিত্র তার অন্তরে কোনো হিংসা নেই, মানুষের কল্যাণ চায়, কেউ কস্ট দিলে সে কস্ট দেয়না, এই রকম মনের মানুষ এবং কথা যখন বলে সত্য কথা বলে।

নবী করিম (সাঃ) বলেছেন, তোমাদের ভিতরে সবচেয়ে ভালো মানুষ, সবচেয়ে সেরা মানুষ হলেন তারা যাদের অন্তরটা পবিত্র।

১১ শ্রেণির সেরা ও ভাল মানুষ আল্লাহ ও রাসূল (সাঃ) এদেরকে শ্রেষ্ঠ বলেছেন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *